Categories


গুড্ডুবুড়ার কক্সবাজার কাণ্ড

গুডুবুড়া খায় না, দায় না। গুডুবুড়ার শরীরটা তাই শুকনাে পাটকাঠি। সেই পাটকাঠির ওপরে বসানাে গােল মাথাটা। দেখতে লাগে একটা চাবির মতাে। একটা লােহার দণ্ড, ওপরে একটা গােল। কিংবা বাচ্চারা মানুষের ছবি আঁকলে যে রকম আকার দেয়, একটা খাড়া রেখা, তার ওপরে একটা গােল্লা, গুডুবুড়া দেখতে সেই রকমই। তবে যেহেতু সে শার্ট পরে, প্যান্ট পরে, তাকে দেখায় কাকতাড়ুয়ার মতাে। মানে একটা বাঁশের কঞ্চি খাড়া করে পোতা, তার বুক বরাবর আরেকটা কঞ্চি আড়াআড়ি বাঁধা, তার ওপরে একটা হাঁড়ি। আর ওই কঞ্চির গায়ে জামাকাপড় পরানাে।

গুডুবুড়া কিছুই খেতে চায় না। 

মা বলেন, বাবা, একটু ভাত খাও। 

মা, আমার খিদে নেই মা। আমি কিছুই খাব না। 

মা বলেন, বাবা, সকালবেলা স্কুলে যাবি, একটু নাশতা খেয়ে যা। 

গুডুবুড়া বলে, মা, আমার নাশতা খেতে ইচ্ছা করছে না।

মা তাকে টিফিন দিয়ে দেন। ক্লাস থ্রিতে পড়ে গুডুবুড়া। ছােটবেলায় তবু কিছুটা খাওয়াদাওয়া করেছে। গত দুই বছর খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছে বললেই চলে। ক্লাস টু থেকে থ্রিতে ওঠার সময় রেজাল্ট ছিল ভয়াবহ।

 


হাসুর পরিস্কার থাকা - ৩

আমি হাসু। মজা করে কথা বলি শরীরের সাথে। সে কথাই বলব তােমাদের। 

একদিন দেখি হাত কথা বলছে না। রাগ করেছে। জানতে চাইলাম কেন রাগ করেছ?

হাত বলে, তুমি আমায় ঠিকমত ধােও না। নখ কাট না। নখে ময়লা থাকে। তাই তােমার সাথে রাগ করেছি।

খারাপ লাগে আমার। হাতকে বলি ঠিকমত নখ কাটব। ময়লা নখ রাখব না। হাত ধুয়ে খাবার খাব। একথা শুনে হাতের রাগ চলে গেল।

 


বাঙালীর হাসির গল্প ১

ছুটিয়া যাইয়া সাপ ঢুকিল এক শাপলা-বিলে। আমি সাপের ফণার উপর বসিয়াই চারটি শাপলাফুল ছিড়িয়া ফেলিলাম। তারপর সাপের ফণাটা ঘুরাইয়া ধরিলাম বাড়ির দিকে। ওই আম-বাগানতক আসিয়া সাপ খােড়লে ঢুকিল। আমি শাপলাফুল কয়টি লইয়া তােমাদের এখানে আসিলাম। তােমরা সাপের কথা সঁচা না মনে করিলে আম-বাগানের ওখানে খুঁড়িয়া। দেখিতে পার, আর আমার হাতের শাপলাফুল ত দেখিতেই পাইতেছ।” সুতরাং তার কথা সঁচা না মানিয়া আর উপায় আছে। কে যাইবে সাপের খােড়ল খুঁজিতে!

এইরূপ গলপের আর শেষ নাই। কোনােদিন সে আসিয়া বলে, “মৌমাছির চাক কুলগাছের উপর। তার উপরে যাইয়া বসিয়া পড়িলাম। অমনি মৌমাছির দল মৌচাক লইয়া আসমানে উড়িতে লাগিল। আমি ত চাকের উপরে বসিয়াই আছি। উড়িতে উড়িতে উড়িতে আসমানে চলিয়া গেলাম।


জন্মদিনের উপহার

ছােটবেলাটা খুব মজার সময়। ১০ মিনিটের পরিচয়ে শিশুরা একে অন্যের আজীবনের বন্ধু হয়ে যায়, বন্ধু হয়ে থাকার প্রতিজ্ঞা করে ফেলে। তারা তাদেরসবচেয়ে পছন্দের খেলনাটাও বন্ধুকে দিয়ে দেয়, কিছু চিন্তা না করেই। বন্ধুর দুঃখে কাদে, আনন্দে হাসে।

বড়বেলায় এমন বন্ধু পাওয়া কষ্টের। বড় হতে হতে মানুষ অনেক পড়াশুনা করে অনেক অংক শিখে ফেলে । বন্ধু বানানাের আগে তখন তারা অনেক অংক কষে। অংক কষে বন্ধু বানায়, অংক কষে হাসে-কাদে।

আমি খুবই সৌভাগ্যবান মানুষ । বড়বেলায় এসেও এমন দু’জন বন্ধু পেয়েছি যারা ভালাে অংক পারেন না। তারা কোনােকিছু হিসেব না করে ১০ মিনিটের পরিচয়েই আমার বন্ধু হয়েছেন। তারা আমার দুঃখে-সুখে কাদে-হাসে।

আমার দুই পুত্র তাদেরকে মামা বলে ডাকে। তােমরাও তাদেরকে মামা বলেই ডেকো।

 


পিকু

দিনটি ছিল শুক্রবার। ফারহিনের মনে আছে। শুক্রবার দুপুরে বাবা নামাজ পড়তে যান। তার থেকে বড় কথা, শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকে। তার থেকে ছােট কথা, তারপরেও, শুক্রবার তাকে অনেক পড়ালেখা করতে হয়। সেরকম এক শুক্রবারের কথা, ফারহিন বসে বসে কবিতা মুখস্থ করছিল। যদিও সেটা মুখস্থ হচ্ছিল না। দাড়ি, কমা, সেমিকোলনে তাল মিলাতে সমস্যা হচ্ছিল। ঠিক তখনি পিকুকে সে পেল। তা কে এই পিকু? পিকু আসলে একটা পেন্সিল। যাকে দিয়ে কমা দেওয়া যাচ্ছিল না। কমা দিতে গেলেই পিকু কু কু কু... করা শুরু করত। তাই ওর নামই হয়ে গিয়েছিল পিকু।


সবগুলোই পরীর গল্প

আমি বললুম, তােমার ছিল একজামিন, বিছানার উপরে বসে বসে ভূগােলবত্তান্ত মুখস্থ করছিলে, কখন তােমার মাথা ঠেকল বালিশে, পড়লে ঘুমিয়ে । সেদিন ছিল পূর্ণিমার রাত্রি। জানলার ভিতর দিয়ে জ্যোত্মা এসে পড়ল তােমার মুখের উপরে, তােমার আসমানি রঙের শাড়ির উপরে। আমি সেদিন স্পষ্ট দেখতে পেলুম, পরীস্থানের রাজা চর পাঠিয়েছে তাদের পলাতকা পরীর খবর নিতে। সে এসেছিল আমার জানলার কাছে, তার সাদা চারদটা উড়ে পড়েছিল ঘরের মধ্যে। চর দেখল তােমাকে আগাগােড়া, ভেবে পেল না তুমি তাদের সেই পালিয়ে আসা পরী কি না। তুমি এই পৃথিবীর পরী বলে তার সন্দেহ হল। তােমাকে মাটির কোল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে সহজ হবে না। এত ভার সইবে না। ক্রমে চাঁদ উপরে উঠে গেল, ঘরের মধ্যে ছায়া পড়ল, চর শিশুগাছের ছায়ায় মাথা নেড়ে চলে গেল। সেদিন আমি খবর পেলুম, তুমি পরীস্থানের পরী, পৃথিবীর মাটির ভারে বাঁধা পড়ে গেছ।

কুসমি বললে, আচ্ছা দাদামশায়, আমি পরীস্থানে থেকে এলুম কী করে?

আমি বললুম, সেখানে একদিন তুমি পারিজাতের বনে প্রজাপতির পিঠে চড়ে উড়ে বেড়াচ্ছিলে, হঠাৎ তােমার চোখে পড়ল দিগন্তের ঘাটে এসে ঠেকেছে।

 


ক্যান্টারভিল প্রাসাদের ভূত

প্রতিভার নাম, অপ্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠক, জনপ্রিয় টিভি-উপস্থাপক, প্রাবন্ধিক, কবি, গল্পকার, অনুবাদক, নাট্যকার-তাঁর পরিচয়ের শেষ নেই। কিন্তু আরো একটা কারণে তাঁর পরিচয়ের শেষ নেই। কিন্তু আরো একটা কারণে তাঁর খ্যাতি দেশজোড়া, অসাধারণ বাগ্মী তিনি; তাঁর বক্তৃতা পাণ্ডিত্য, সরসতায়, সৌন্দর্যে অপূর্বতায় উজ্জ্বল। এই বইয়ে থাকলো প্রধানত স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সামনে দেওয়া বিভিন্ন উপলক্ষে তাঁর বক্তৃতাগুলো। হাসির ছটা দিয়ে বক্তৃতাগুলো মুরু হয়েছে সাধারণ, কিছুক্ষণের মধ্যেই গল্পচ্ছলে বক্তা ঢুকে গেছেন বিষয়ের গভীরে, কেবল তত্ত্বকথা নয়, জীবনরসিকের জীবনাভিজ্ঞতার আলোয় ঋদ্ধ এই বক্তৃতাগুলো। আছে সাধারণ কৌতুক থেকে শুরু করে মনীষীদের জীবনের সত্য ঘটনার উল্লেখ, আছে কবিতা কিংবা সাহিত্যের উজ্জ্বল উদ্ধৃতি। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কিংবা রণদাপ্রসাদ সাহার মতো ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বক্তৃতাও ঠাঁই পেয়েছে এই দুই মলাটের মধ্যেই-যে ভাষণের উদ্দিষ্ট শ্রোতাদের সবাই হয়তো তরুণও নয়।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের নিজের অন্তর জুড়ে আছে ভালোবাসা-বেদনা, এই সমাজের জন্যে, এই রাষ্ট্রের জন্যে, মানবতার জন্যে, তাই তিনি নিরলসকর্মী, কর্মিষ্ঠ ভাবুক, অনলস লেখক, নাছোড় সমাজহিতৈষী-নিজে কাজ করে চলেছেন বলে তাঁর এই বক্তৃতামালা কেবল বাগাড়ম্বর বলে ধরার ধুলায় হারিয়ে যাবার নয়। এই বইয়ের পাঠ তাই বদলে দিতে পারে একজন তরুণের জীবন, তাকে জাগিয়ে তুলতে পারে ভারোবাসায়-বেদনায়।

সূচিপত্র
* লাইসেন্স দিয়ে বাঘ মারা
* পেতেই যদি হয় তো সোনার হরিণ
* যেমন চাই চকবাজার তেমনি চাই রমনা পার্ক
* ব্রাহ্মণের বাড়ির কাকাতুয়া
* একটুখানি পাশ দিয়ে
* সথ্যের সপক্ষে
* চাই বড় মন, বৃহতের স্পর্শ
* মনকে নিয়ে এসো একটি বিন্দুতে
* চাই মহৎ পাগল
* ছোট একটু সোনালি স্পর্শ
* চাই স্বপ্নে-ভরা আনন্দময় শৈশব
* আমগাছ তলার অবসর
* চলো আলোর দিকে, সৌন্দর্যের দিকে
* শিল্পপ্রেমিকের শুঁড়িখানা
* চাই বেদনা, চাই আত্মোৎসর্গ


এক মলাটে শিক্ষণীয় সব মজার গল্প

‘বীরবল (Birbal)' ১৫২৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশে যমুনার তীর সংলগ্ন টিকাভানপুরে এক দরিদ্র হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল মহেশ দাস। তার পিতা গঙ্গা দাস এবং মাতা অনভা দাবিত। তিনি ছিলেন পরিবারের তৃতীয় সন্তান। পরিবারটির পূর্ব হতেই কবিতা ও সাহিত্য সম্পর্কে অনুরাগ ছিল। বীরবল হিন্দি, সংস্কৃত ও পার্সিয়ান ভাষায় জ্ঞানার্জন করেন। তিনি সংগীত এবং ব্রজ কবিতায় পারদর্শী হয়ে ওঠার পাশাপাশি সংগীতে ছন্দ প্রয়ােগের ব্যাপারে অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠেন। তিনি তাঁর কবিতা ও গানের কারনে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তিনি রেবার রাজা রামচন্দ্রের রাজপুত কোর্টে ‘ব্রাহ্ম কবি' নামে কাজ করেন। তাঁর অবস্থার উত্তরণ ঘটে যখন তিনি একটি সম্মানিত এবং ধনী পরিবারের এক কন্যাকে বিয়ে করেন।


মানুষের জন্য

নাহ্ আজ বােধ হয় আর বসা যাবে না। মাথাটা বারবার ঘুরে উঠছে। কিছুতেই বসে থাকতে পারছে না কলিম মিয়া।

কলিম মিয়া ভাবে আজ থাক। আর পেয়ারা বিক্রি নয়। এখন বাড়ি যাই। অনেক কষ্টে ঝুড়িটা মাথায় তােলে সে। ধীরে ধীরে হাঁটতে থাকে।

হাঁটতে হাঁটতে মাথাটা ঘুরে ওঠে তার। পা ফেলতে পারে না সামনে। মাথা থেকে পড়ে যায় পেয়ারার ঝুড়িটা। সাথে সাথে কলিম মিয়াও মাটিতে পড়ে যায়।

 


আগের ‍দিনের কথা - ৯

শান্তা বলল সবুজকে, ভাইয়া জান আমাদের বাংলাদেশে বাচ্চাদের জন্য মা-বাবারা খুব সুন্দর সুন্দর কাজ করেন। এতে বাচ্চারা খুব সুন্দর করে বেড়ে ওঠে।

সবুজ বলল, তাই নাকি! তা আমাদের মা-বাবারা এসব জানলেন কিভাবে?

শান্তা বলল, এসব শিখেছেন নানা-নানী, দাদা-দাদী আর অন্য বড়দের থেকে। এভাবে একজন আরেকজন থেকে শিখেছে।

সবুজ বলল, চল না আমরা মজা করে পঞ্চাশ বছর আগে চলে যাই। 

গিয়ে দেখি তাে সবাই তখন কি করত।

 


গিট্টু দা

নাহ্, গিটু দা'র অত্যাচার তাে আর সহ্য করা যায় না। ক্রিকেট টুর্নামেন্টের জন্য দুপুর দুইটায় প্র্যাকটিসে যেতে হবে! তুষারের এই মন্তব্যের সাথে একমত আকাশ, আল আমিন, শান্তি, অমিত সবাই। কিন্তু গিটু দা'র সামনে বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাধার কেউ নেই। কেউই তাকে বলতে পারবে না- ‘গিটু দা' তুমি স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছাে। অগত্যা ভর দুপুরেই শুরু হয় ম্যাচ প্র্যাকটিস। গিটু দা’র স্বৈরতন্ত্র নিয়ে আলােচনা হলেও তার দরাজ দিলের কথা কেউ ভােলে না। গিটু দা’র পয়সায় তাদের ক্লাব চলে। অবশ্য পয়সায় না বলে মােটা টাকায় বলাই ভালাে। এজন্য অবশ্য সবাই মিলে ক্লাবের নাম ‘গিটু কিশাের ক্লাব দিয়েছে। খুশি হলেও গিটু দা’ মিনমিনে গলায় আপত্তি করেছিল। পাড়ার লােকের দেয়া গিটু নামে ক্লাব করবি? তার চেয়ে আমার গােলাম আলী নামে দে না!'

 


টুকটুকি যখন বড় হবে

জানাে, আমাদের চারপাশে নানাজন। 

নানারকম কাজ করে।

দেখাে, ঝাড়ুদার রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছে। 

রিকশাওয়ালা রিকশা চালাচ্ছে।

আমিও বড় হয়ে অনেককিছু হতে চাই।

তােমরা কি জানাে, বড় হয়ে আমি কী হতে চাই?

আমি বড় হয়ে দোকানদার হতে চাই ।

গুণিময়রার মতাে দোকানদার । 

আমি দোকানে বসে নানারকম খেলনা বিক্রি করব। 

সবাই এসে অনেক অনেক খেলনা কিনে নিয়ে যাবে ।

 


দা স্ট্রেঞ্জ লাইব্রেরি

বুড়ো ইশারায় পথ দেখিয়ে বালককে নিয়ে যায় অচেনা-অন্ধকার রুমে। গোলকধাঁধাঁয় বালক অস্থির; সেইসাথে ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে বালকের অধিক অস্থির হয়ে উঠি আমরা! এখানেই মুরাকামি আর অনুবাদকের সার্থকতা। রেলিং ধরে বুড়োর পিছুপিছু বালক নেমে যায় টিমটিম করে আলোজ্বালা ভেড়ামানবের রুমে, ততক্ষণে অবশ্য সন্ধ্যা! ভেড়ামানবটাও দেখার মতো- ‘ভেড়ামানবের জামার পিছনের ছোট্ট একটা লেজ লাগানো। হাঁটার সময় পেন্ডুলামের মতন এপাশ-ওপাশ দুলছে লেজটা।’ আহা, ওখানেই তো জেলখানার সেল! ভয়ানক বুড়ো ধোকা দিয়েই বলে- ‘চুপ থাকো, বোকা কোথাকার।’ বই তিনটা পড়ে শেষ করার মেয়াদ মাত্র একমাস এবং কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলেই বালকের মুক্তি। বালকের সেলের বর্ণনা লেখক দেন এভাবেই- ‘ছোট্ট একটা সেল, তেমন কিছুই নেই ভিতরে- একটা বিছানা, একটা পড়ার ডেস্ক; বেসিন একটা আর একটা ফ্লাশ টয়লেট। বেসিনটার একপাশে টুথব্রাশ আর একটা গ্লাস রাখা।’ বালকের মনে পড়ে মায়ের কথা- যিনি সন্ধ্যা নামলেই খাবার প্রস্তুত রাখে তার জন্যে। ভেড়ামানব জানায়- ‘তার মাথাটা কেটে ফেলা হবে, ইয়াম্মি মগজটা খেয়ে ফেলবে ঠিক একমাস পর। বালক ভেড়ামানবকে কাকুতি করে মুক্তির উপায় বাতলে দিতে, কিন্তু তারও তো ভয় আছে- লোমওয়ালা শুঁয়োপোকার। বালক ঘড়ি দেখে আর ভাবে মায়ের কথা, পোষা শালিকের কথা। বুড়ো, ভেড়ামানবের পর আসে মিষ্টি একটা মেয়ে, খাবার নিয়ে। হয়তো বয়সের ফেরে দুজনেই বন্ধু হয়ে যায়। মেয়েটা কী রকম? লেখকের ভাষায়- ‘খুব হালকা পায়ে হাঁটে মেয়েটা, মে মাসের বাতাসের মতোন।’


মজার খেলা দাবা

দাবা বড়ই মজার খেলা। বুদ্ধির খেলা। চিন্তা-শক্তির খেলা। টুর্নামেন্ট দাবা কিন্তু খুবই সিরিয়াস খেলা। দাবা খেলায় কোন ফাঁকি-ঝুঁকির অবকাশ নেই। সারাক্ষণই খেলােয়াড়দের সজাগ-সতর্ক থেকে কঠিন স্নায়ুযুদ্ধ লড়ে যেতে হয়। এটা দস্তুরমত দুই সেনাপতির মধ্যে মুখােমুখি যুদ্ধ। এখানে সেনাপতির ভূমিকায় যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী খেলােয়াড়—সাদা আর কালাে। এসাে এবার আধুনিক দাবা খেলার সাথে তােমাদের পরিচয় করিয়ে দেই।

 


পানি

সুস্থ থাকার জন্য আমরা সবাই পানি খাই পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য পানি চাই-ই চাই। পানি দিয়ে আমরা সবাই করি অনেক কাজ বলাে দেখি সিসিমপুরে করছে কে কী আজ? সাগরে পানি, নদীতে পানি, পানি আছে খালে পুকুরে পানি, কলে পানি, পানি আছে বিলে। পাহাড় থেকে ঝরনা হয়ে নামছে পানি জানি, আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে, কোথায় পেল পানি?


গুপি গাইন বাঘা বাইন

শিশুদের জন্য কত গল্পই তো লেখা হয়। সব গল্প চিরকালের নয়। কিছু গল্প চিরকালের। সেসব গল্পের লেখকেরাও চিরকালের। চিরকালের সেই লেখকদের নির্বাচিত কিছু গল্প নিয়ে এই সিরিজ। সিরিজের প্রতিটি গল্পে লেখকের ভাষা সম্পূর্ণ রক্ষা করা হয়েছে। কেননা গল্পগুলো চিরকালের হয়ে উঠেছে শুধু কাহিনীর গুণে নয়, লেখকের ভাষার গুণেও। চিরকালের এসব সম্পদকে অবিকৃতভাবে এই সিরিজে প্রকাশ করা হয়েছে, যেন গুল্পগুলো থেকে প্রত্যেকটি শিশু তার মতো করে শিক্ষণীয় বিষয় গ্রহণ করতে পারে। তরুণ চিত্রশিল্পী সব্যসাচী মিস্ত্রী চিরকালের এই গল্পকে চিত্রের মাধ্যমে নতুন করে চিত্রগল্প সৃষ্টি করেছেন।


মজার জেনেটিক্স

আমাদের মধ্যে কেউ বেঁটে, কেউ বা লম্বা, কেউ কালো, কেউ ফরসা। কারও মাথায় কোঁকড়ানো চুল, কারও বা মস্ত টাকা। এ সবের পিছনে কলকাঠি নাড়ে যে-বস্তুটি তার নাম ‘জিন’। বহমান জীবনধারার আসল নির্ণায়ক বলে বিজ্ঞানীরা যাকে চিহ্নিত করেছেন। ক্রোমেজমের মধ্যে রংবেরং-এর পুতির মতো অজস্র জিন সাজানো আছে আমাদের দেহে। বিজ্ঞানীরা এইসব জিনদের আলাদা করে চিনে নিতে পেরেছেন। জিনের কার্যকলাপ বিচিত্র, রহস্যময়, কখনও বা ম্যাজিকের মতো অবিশ্বাস্য। ছোটদের জন্য খুব সহজভাবে জিনের নানা কাণ্ডকারখানার কথা লিখেছেন পার্থসারথি চক্রবর্তী, যাঁর বই মানেই মজার বিজ্ঞান, বিজ্ঞানের মজা। তবে ছোটদের জন্য লেখা হলেও এ-বই সবার মনে কৌতুহল জাগিয়ে তুলবে। বইয়ের পাতায় পাতায় দেবাশীষ দেবের আঁকা মজার কার্টুন।